শ্রীশ্রীঠাকুরের লীলা দর্শনে সকলেই বিশেষ আনন্দিত হন। শ্রীসত্যনারায়ণ পূজার দিন আমার ছোট ছেলে বাড়ীর সদর দরজার ফলকে লিখে দেয় -- "রামের বাড়ী"।

 শ্রীশ্রীরামঠাকুরের লীলা মাধুরীঃ~




১৩৪৬ সন।
শ্রীশ্রীঠাকুর তখন ফিরিঙ্গি বাজারে বিধু বাবুর বাসায় এসেছেন।
আমার স্বামী আমাকে বললেন, চল, আমরা তাঁর কাছে যাই।
বিধু বাবুর দোতলায় উঠে ঘরে প্রবেশ করে দেখলাম এক সৌম্য শান্ত দিব্যকান্তি জ্যোতির্ময় পুরুষ একটি খাটের ওপর বসে আছেন।
আমি তাঁর প্রতি অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে রইলাম....
শ্রীশ্রীঠাকুরের চরণকমল স্পর্শ করে প্রণাম করতে মধুর কন্ঠে তিনি বললেন--
"মাটিতে মাদুর পাতা আছে, বসেন।"
আমরা বসামাত্রই ঠাকুর বললেন-
"নাম চাই?"
আমরা বললাম, "হ্যা।"
নাম দিয়ে তিনি বললেন---
"সত্যনারায়ণের সেবা করবেন।"
১৩৯১ সন।
একদিন আমাদের পাশের বাড়ীতে চুরি হল। আমার মেজ ছেলে পরদিন অফিস যাবার আগে আমাকে বললো," মা,খুব সাবধানে থেকো।দেখছ ত কেমন চুরি হচ্ছে।
তুমি ত সবসময়ই দরজা জানালা খোলা রেখে এদিক সেদিক যাও - দেখবে একদিন আমাদের বাড়ীতেও চুরি হবে।"
আমি বললাম, "এটা ত রামের বাড়ী। রামই সব দেখবেন।"
ছেলে বলল,"ওসব বলে লাভ নেই। যখন চুরি হবে তখন বুঝবে।"
জোর গলায় বললাম, "ভাবতে হবে না। এটা রামের বাড়ী, রামই দেখবেন।"
ছেলে তখন বলল, "তোমার রামের যখন এতই ক্ষমতা, তখন দেখি ত এই পৌষ মাসে আমাদের উঠোনের আম গাছে ঠাকুর কেমন আম ফলাতে পারেন?"
আমি ছেলের কথা শুনে বলেছিলাম--
"ঠাকুরের ইচ্ছে হলে তিনি সবই করতে পারেন।"
সেদিনই দুপুর বেলা...
পাশের বাড়ীর মেয়েটি মাসীমা মাসীমা বলে আমাকে ডাকতে লাগলো।
ডাক শুনে জিজ্ঞেস করলাম--
" ডাকছ কেন?"
সে বলল-- "আপনাদের আম গাছে দেখুন আম হয়েছে।"
চকিত হয়ে বললাম-- "কোথায়?"
সে ঝাড়নের সরু লম্বা লাঠি দিয়ে আমাকে আমটি দেখালো।
আমটি দেখলাম বেশ বড় আকৃতির।
এতদিন গাছে বড় হতে থাকলে চোখে ত পড়ারই কথা।
কিন্তু দেখিনি ত....!!!
আরো আশ্চর্যের কথা, ওই আমটি ছাড়া গাছে আর একটি আমও নেই।
ঠাকুরের অলৌকিক লীলা...
এই ঘটনা দেখে আমি ত হতবাক...!!!
মনে প্রাণে ঠাকুরকে জানালাম শত সহস্র প্রণাম।
ছেলেমেয়েরা অফিস থেকে ফিরলে তাদের আমের কথা বললাম।
যে ছেলে বলেছিল -- সে ত ঠাকুরের এই লীলা দেখে বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে পড়ে। ঠাকুরের অসীম ক্ষমতা দেখে তাঁর প্রতি তার ভক্তি বিশ্বাস দৃঢতর হয়।
এই অলৌকিক ঘটনা মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রতিবেশীরা সবাই আমটি দেখতে ছুটে আসেন।
পরদিন সকালে আমার ছোট ছেলেকে বললাম আমটি পেড়ে আনতে নইলে কে কখন আমটি ছিঁড়ে নিয়ে যাবে - ধরতেও পারব না।
ছেলে বললো--"গাছে আছে, গাছেই থাক -- পাড়ার দরকার নেই।কেউ পেড়ে নেবে না।"
আমার ইচ্ছে ছিল আমটি তুলে আনার। তাই অন্য একটি ছেলেকে দিয়ে আমটি ঘরে এনে ঠাকুরের আসনে শ্রীপটের সামনে রেখে দিলাম।
বাড়ীতে একদিন শ্রীসত্যনারায়ণ পূজা হয়। বীণাপাণি সেনগুপ্ত প্রমুখ ভগিনী সন্মেলনের সকল ভগিনীগণ অসময়ে এই আম্র ফলের কাহিনী শুনে আমাদের বাড়ীতে আসেন ও আমটি দর্শন করেন।
শ্রীশ্রীঠাকুরের লীলা দর্শনে সকলেই বিশেষ আনন্দিত হন।
শ্রীসত্যনারায়ণ পূজার দিন আমার ছোট ছেলে বাড়ীর সদর দরজার ফলকে লিখে দেয় --
"রামের বাড়ী"।
পরম পূজ্যপাদ চতুর্থ শ্রীমোহান্ত মহারাজ ভবতোষ বন্দোপাধ্যায় কে আমের বৃত্তান্তটি নিবেদন করলে শ্রীমহারাজের নির্দেশ অনুসারে আমটি শ্রীশ্রীঠাকুরের সামনেই রেখে দেওয়া হয়।
ইদানীং শীর্ণ হয়ে এলেও অদ্যাবধি
" রামের বাড়ী"-তে ঠাকুরের শ্রীপটের সামনে অলৌকিক আমটি সযত্নে রক্ষিত আছে।
"রামের বাড়ী"
রেণুকণা মণ্ডল
জয়রাম।। জয়রাম
শ্রীশ্রীঠাকুরের লীলা দর্শনে সকলেই বিশেষ আনন্দিত হন। শ্রীসত্যনারায়ণ পূজার দিন আমার ছোট ছেলে বাড়ীর সদর দরজার ফলকে লিখে দেয় -- "রামের বাড়ী"। শ্রীশ্রীঠাকুরের লীলা দর্শনে সকলেই বিশেষ আনন্দিত হন। শ্রীসত্যনারায়ণ পূজার দিন আমার ছোট ছেলে বাড়ীর সদর দরজার ফলকে লিখে দেয় --  "রামের বাড়ী"। Reviewed by SRISRI RAMTHAKUR KOTHA O BANI YOUTUBE CHANNEL on July 25, 2021 Rating: 5

No comments:

sri sri Ramthakur

Powered by Blogger.