শ্রীশ্রী ঠাকুরের শ্রী মুখে ব্যাখ্যা ,শ্রীশ্রী সত্যনারায়ণ পূজার পূর্ব প্রস্তুতি এবং পূজা প্রণালীঃ
১। সুসজ্জিত বেদী, চেয়ার, সিংহাসনে শ্রী শ্রী ঠাকুরের যে কোন বিগ্রহ স্থাপন করতে হবে।
২। ঘট বসানোর প্রয়োজন হয় না পট প্রতিষ্ঠা করলে।
৩। শ্রীশ্রী ঠাকুর শ্রীমুখে বলেছেন ঘট স্থাপন করে আহ্বান করলে দায়িত্ব বেড়ে যায়।
৪। শ্রীশ্রী ঠাকুরের ডানদিকে জলচৌকিতে পীঠ সাজাতে হয়। চৌকির উপর ধৌত বস্ত্র পেতে চৌকির চার কোণায় চারখানা প্রনবের প্রতীক লাল নিশানসহ তীরধনুক দিতে হয়। পাঁচ বাটি সির্ণিতে মোকাম হয়। পাঁচটা আস্ত পান, পাঁচটা আস্ত সুপারি পানের উপরে পাঁচ বাটি সির্ণি রাখতে হয়। পীঠে একটা চাক্কু বা ছুরি দিতে হয়।
৫। শ্রীশ্রী ঠাকুর বিগ্রহের বাম পাশে সুসজ্জিত তুলসীর বেদী স্থাপন করতে হয়।
৬। বিগ্রহের সম্মুখে ত্রিপদীর উপর তাম্রপত্র অথবা কাঁসপিতলের থালা দিতে হয়। থালার উপরে ফুল, বেলপাতা তুলসী নিবেদন করতে হয়।
৭। পূজকের সম্মুখে কোষাকুষী, ডানে পুষ্পপত্রে পূজার উপকরণ, বামে ঘন্টা, হস্ত প্রক্ষালনের এক ঘটি বা এক কমন্ডলী জল ও ডাবুর রাখতে হবে। হাত মোছার জন্য গামছা বা রুমাল রাখতে হবে। কোনও অবস্থায় সে রুমাল আরতির সময় ব্যবহার করা যাবে না।
৮। পঞ্চপীর বা পঞ্চগুরুর জন্য পাঁচটা আসন, পাঁচটা থালায় ভোগ, পাঁচটা জলপূর্ণ ঘটি, পাচটা জলপূর্ণ গ্লাস, ডাবুর, পাঁচ বাটি সির্ণি, মুখসুদ্ধি, খরিকা ও পাঁচ খিলি পান দিতে হয়। কোথায় পাঁচটার জায়গায় তিনটা আসন ব্যবহার করা হয়।
৯। তুলসীর সম্মুখে একটা ভোগ, আরেকটা থালায় ৯/১১ খানা কুচা নৈবদ্য দিতে হবে। কোথাও কোথাও নিয়মের ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। শ্রীশ্রীসত্যনারায়ণ পূজায় মোকাম সাজানোর তাৎপর্যঃভগবান বা ইষ্টের ‘নাম' জপ, স্মরণ, মনন, কীর্তন ও ভক্তিই হল পুষ্পাঞ্জলী এই ধনু হ’ল প্রণবের প্রতীক।
খ) পাঁচখানা নিশান হ'ল- পঞ্চপ্রাণ যথা প্ৰাণ, অপাণ, সমান, উদান, ব্যান।
গ) পাঁচবাটী সির্ণি— পঞ্চভূত ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ, ব্যোম, রূপ, রস, গন্ধ, স্পর্শ ও শব্দের মহামিলন।
ঘ) ছুরি বা অসি দিয়ে ষড়রিপু কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ, মাৎসর্যকে ভক্তিছেদন করবেন।
সির্ণি- আটা দুধ, চিনি, কলা ও নানা দ্রব্যের সংমিশ্রণ অর্থাৎউপাদেয় খাদ্য।
পূজোপচার- নিত্য পূজো পঞ্চোপচারে করলেই চলে।
উৎসবাদী বিশেষ পূজার সময় সামর্থানুসারে দশোপচার, ষোড়শপচার অথবা অষ্টাদশোপচারে পূজা করতে হয়।
পূজোপকরণ- ফুল, বেলপাতা, দূর্ব্বা, তুলসী, অগুরো, চন্দন, ধূপ, ধুপকাঠি, তিল-হরিতকি, আতপ চাউল, দীপ ইত্যাদি।সির্ণি তৈরীর নিয়ম- শ্রীশ্রীসত্যনারায়ণের সেবার সির্ণি আটা/ময়দা/ যে কোনটির সঙ্গে দুধ, কলা, চিনি/গুড় ও ঘৃত দিয়ে তৈরি করা হয়। অঞ্চলভেদে সুস্বাদু বিভিন্ন ফলও মিশানো হয়।
তবে শ্রীশ্রীঠাকুরের পূজায় চাঁপা কলা এবং বাতাসা না দেয়াই একান্তভাবে বাঞ্ছনীয়।আরতির দ্রব্য- ধূপ, ধূপকাঠি, পঞ্চপ্রদীপ, কর্পূর, জলশঙ্খ, রুমাল, ফুলের তোড়া, পাখা বা চামড়।আরতি নিয়ম- প্রত্যেক আরতির সময় দেবতা পদতলে চারবার, নাভী দেশে দু বার, মুখে তিনবার ও সর্ব্বাঙ্গে সাতবার আরতি করতে হবে।
ঐ সময় শ্রীগুরুর বিগ্রহ কল্পনা করতে হবে।আমাদের মত সাধারণ ভক্তদের জন্য
১। পঞ্চোপচারে (যথা:- গন্ধ, পুষ্প, ধূপ, দীপ ও নৈবদ্য) পূজা করা যেতে পারে।
২। গন্ধ হিসেবে চন্দন ব্যবহার করা যায়। শ্বেত চন্দন হলে ভালো হয়। সামথ্য অনুযায়ী অগুরো রাখা যেতে পারে।
৩। পুষ্প বাড়ীতে থাকলে তা অথবা সামান্য কয়েকটি ফুল (শ্বেত ও সুগন্ধযুক্তহলে ভাল) সত্যনারায়ণ রূপে শ্রীগুরুর শ্রীচরণে নিবেদন করা যায়।
No comments:
sri sri Ramthakur