জীবনের পথ যেন পূর্বনির্ধারিত এক অদৃশ্য স্রোত…
আমরা কি সত্যিই স্বাধীন? নাকি প্রারব্ধ নামের শৃঙ্খলে বাঁধা?
আজ আমরা আলোচনা করব — প্রারব্ধ, প্রাক্তন, ভাগ্য ও ভোগ — এই চিরন্তন দার্শনিক সত্যগুলো নিয়ে।
৪৯) প্রারব্ধ এবং প্রাক্তন, ভাগ্য, অংশসম্ভূত ও এক কর্ত্তৃত্বজ্ঞানই হইবে। সূর্য্য উদয় হয়, দন্ডপলাদি বিভক্তরুপে মানব মাত্রই ভোগ করিতেছে, কোন মানবই সেই অংশ রুপ দণ্ডপলাদি ত্যাগ করিতে পারে না বলিয়াই ইহার অংশীভূত আশ্রয়ের সময়কে প্রারব্ধ বলে এবং কালচক্র বলে। সূর্য্য উদয় হইতে পুনরায় উদয়কালকে যে যে রুপে বিভক্ত বুদ্ধির সঙ্গ হয় তত্তৎ বোধের বিষয়কে ভোগ বলে। এই ভোগ আব্রহ্মস্তম্বপর্য্যন্ত সকল প্রাণিকেই আশ্রয় করিতে বাধ্য হয়। ত্যাগ করিবার কাহারও শক্তি নাই। গুরু আদিষ্ট [?] কর্ম্মের বৃদ্ধি করিতে করিতে আপন হইতেই সকল বিষয়ের বোধ হয়, কাহারো বুঝাইয়া দিবার ক্ষমতা নাই।
প্রারব্ধ — অর্থাৎ পূর্বকৃত কর্মের ফল, যা এ জীবনে আমাদের ভোগ করতেই হবে।
যে সময়ে এবং যেভাবে কর্মের ফল আমাদের জীবনে প্রকাশ পায়, তাকেই বলা হয় কালচক্র।
☀️ সূর্য যেমন প্রতিদিন উদিত হয় — ঠিক তেমনই, আমাদের জীবনে যেসব ঘটনা ঘটে, তা যেন একটি চক্র — অনিবার্য ও নিয়ন্ত্রিত।
এ জীবন এক বিভাজিত নাট্যমঞ্চ, যেখানে দণ্ড, ফল, সুখ ও দুঃখ — সবই পূর্ব নির্ধারিত।
👉 মানবমাত্রই দণ্ডপলাদি — অর্থাৎ কর্মফল ভোগ করে চলেছে।
এই কর্মফল থেকে কেউই মুক্ত নন, না দেবতা, না মানব।
ভাগ্যই সেই অংশসম্ভূত দণ্ড, যা আমাদের ভোগ করতেই হয় — চাই বা না চাই।
এটাই প্রারব্ধ — এবং এই ভোগের নামই জীবন।
🔁 আব্রহ্মা থেকে স্তম্ভ পর্যন্ত — সমস্ত জীবই এই কর্মফলের বৃত্তে আবদ্ধ।
এই কর্মের পথেই একসময় বুদ্ধির বিকাশ হয়, জ্ঞান প্রকাশ পায় —
কিন্তু সেটা কেবল অভিজ্ঞতায়, নিজ নিজ প্রেক্ষিতে।
কারোর পক্ষেই অন্যকে পুরোপুরি বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।
🎓 গুরু আদিষ্ট কর্ম — মানে জীবনের যে কর্তব্য বা সাধনা আমরা গ্রহণ করি —
তা পালন করতে করতেই আস্তে আস্তে আমরা নিজেই সমস্ত বিষয় বুঝতে শুরু করি।
শুধু তখনই জ্ঞান আসে — কাউকে মুখে বুঝিয়ে নয়, জীবনে গ্রহণ করেই।
[উপসংহার]
প্রারব্ধ আমাদের পথ ঠিক করে দেয়,
ভাগ্য আমাদের গন্তব্য জানায়,
কর্ম আমাদের গতি নির্ধারণ করে।
এ জীবন তাই বোঝার নয় — ভোগ করার ও উপলব্ধির।
[শেষে আবহ সংগীত ও শ্লোক/উক্তি]
🕉️ “কর্মণের বাহ্যে কিমপি নাস্তি” — কর্ম ছাড়া বাইরে কিছু নেই।
No comments:
sri sri Ramthakur